করোনাভাইরাসঃ করোনাভাইরাস বলতে এক প্রকার অতিক্ষুদ্র জৈব কণা বা অণুজীব যারা জীবিত কোষের ভিতরেই মাত্র বংশবৃদ্ধি করতে পারে। এরা এক্যারিওটা শ্রেণির সদস্য ও আণুবীক্ষণিক এবং অকোষীয় ভাইরাসের একটি শ্রেণিকে বোঝায় যেগুলি বিশেষ করে স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিদেরকে আক্রান্ত করে। যেমন মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রথমে শ্বাসনালীর মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়। এই সংক্রমণের লক্ষণ মৃদু হতে পারে, অনেকসময় যা সাধারণ সর্দিকাশির ন্যায় মনে হয়, কিছু ক্ষেত্রে তা অন্যান্য মারাত্মক ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে, যেমন সার্স, মার্স এবং কোভিড-১৯। অন্যান্য প্রজাতিতে এই লক্ষণের তারতম্য দেখা যায়। অন্যান্য প্রাণী যেমন মুরগির মধ্যে এটা ঊর্ধ্ব শ্বাসনালী সংক্রমণ ঘটায়, আবার গরু ও শূকরে এটি ডায়রিয়া সৃষ্টি করে।
করোনা ভাইরাস ঠেকাতে হলে কি কি করণীয় -
১. বারবার হাত ধোয়াঃ
নিয়মিত এবং ভালো করে বারবার হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে )। কারন এ
কথা প্রমাণিত যে সাবান–জল দিয়ে ভালো করে হাত ধুলে এই ভাইরাসটি
হাত থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। হাতে ময়লা বা নোংরা দেখা না গেলেও বারবার হাত ধুতে পারেন।
তবে বিশেষ করে হাত ধোবেন অসুস্থ ব্যক্তির পরিচর্যার পর, হাঁচি–কাশি দেওয়ার
পর, খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে, টয়লেট ব্যবহারের পর, পশুপাখির পরিচর্যার পর।
২. দূরত্ব বজায় রাখুনঃ
এই সময় যেকোনো সর্দি–কাশি, জ্বর বা অসুস্থ ব্যক্তির কাছ
থেকে অন্তত এক মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। কারন আর সব ফ্লুর মতোই এই রোগও কাশির
ক্ষুদ্র ড্রপলেট বা কণার মাধ্যমে অন্যকে সংক্রমিত করে। তাই যিনি কাশছেন, তাঁর থেকে
দূরে থাকাই ভালো। ইতিমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। অসুস্থ পশুপাখি
থেকে দূরে থাকুন।
৩. নাক–মুখ স্পর্শ নয়ঃ
হাত দিয়ে আমরা সারা দিন নাক–মুখ স্পর্শ করে থাকি। সেই বস্তু থেকে ভাইরাস হাতে লেগে যেতে পারে। তাই সতর্ক
থাকুন। অপরিষ্কার হাত দিয়ে কখনো নাক–মুখ–চোখ স্পর্শ
করবেন না। ৪. কাশির আদবকেতা মেনে চলুন নিজে
কাশির আদবকেতা বা রেসপিরেটরি হাইজিন মেনে চলুন, অন্যকেও উৎসাহিত করুন। কাশি বা হাঁচি
দেওয়ার সময় নাক, মুখ রুমাল বা টিস্যু, কনুই দিয়ে ঢাকুন। টিস্যুটি ঠিক জায়গায় ফেলুন।
৫. প্রয়োজনে বাড়িতে থাকুনঃ
অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক
ব্যবহার করুন।
৬. খাবারের ক্ষেত্রে সাবধানতাঃ
কাঁচা মাছ–মাংস আর রান্না করা খাবারের জন্য
আলাদা চপিং বোর্ড, ছুরি ব্যবহার করুন। কাঁচা মাছ–মাংস ধরার
পর ভালো করে সাবান–জল দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। ভালো করে
সেদ্ধ করে রান্না করা খাবার গ্রহণ করুন। অসুস্থ প্রাণী (হাঁস, মুরগি) কোনোমতেই খাওয়া
যাবে না।
৭. ভ্রমণে সতর্কতা বজায় রাখুনঃ
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশভ্রমণ বা অন্যান্য জায়গায় ভ্রমণ করা থেকে বিরত
থাকুন ।অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।