■ শিখনের স্তর : শিখনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর হলাে –
1) সংরক্ষণ বা ধারণ,
2) পুনরুদ্রেক/মনে করা,
3) প্রত্যভিজ্ঞা/চেনা। নীচে স্তরগুলির পরিচয় দেওয়া হলাে।
1) সংরক্ষণ : সংরক্ষণ আদতে একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে নানা অভিজ্ঞতা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয়। একেই বলে সংরক্ষণ। বাস্তবে মানুষ শিখনের মাধ্যমে যা কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে, তার অনেকটাই ভুলে যায়। তবুও কিছু অংশ স্মৃতির মণিকোঠায় সংরক্ষিত হয়, মনােবিজ্ঞানে এরই নাম সংরক্ষণক্রিয়া। এক্ষেত্রে কতকগুলি বিষয় গুরুত্ব পায়। বিষয়গুলি এইরূপ ----
(ক) বিষয়টি ভালােভাবে বুঝে নেওয়া এবং পুনঃ পুনঃ অনুশীলন।
(খ) বিষয়টি যত বেশি সাম্প্রতিক হবে, ততই মনে রাখার সুবিধা হবে।
(গ) বিষয়টির প্রতি আগ্রহ থাকলে সংরক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হবে।
2) পুনরুদ্রেক : শিখনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর। কারণ সংরক্ষিত বিষয়টি যদি ঠিক সময়, ঠিক জায়গায় পুনরুদ্রেক করা না যায় তা হলে শিখন সম্পূর্ণতা পায় না। পূর্ব অভিজ্ঞতাকে পুনরায় মনে করাকে বলে পুনরুদ্রেক। এটি দু’প্রকার।
(ক) প্রত্যক্ষ পুনরুদ্রেক : যখন কোনাে অভিজ্ঞতাকে পুনরুদ্রেক করার সময় তার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কযুক্ত অভিজ্ঞতার সাহায্য নেওয়া হয় তখন তাকে বলে প্রত্যক্ষ পুনরুদ্রেক।
(খ) পরােক্ষ পুনরুদ্রেক : যখন কোনাে অভিজ্ঞতাকে পুনরুদ্রেক করার ক্ষেত্রে তার সঙ্গে পরােক্ষভাবে সম্পর্কযুক্ত অভিজ্ঞতার সাহায্য নেওয়া হয় তখন তাকে বলে পরােক্ষ পুনরুদ্রেক। পুনরুদ্রেক প্রক্রিয়ায় তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি হলাে –
(১) সান্নিধ্যের সূত্র,
(২) সাদৃশ্যের সূত্র,
(৩) বৈসাদৃশ্যের সূত্র।
3) প্রত্যভিজ্ঞা : শিখনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্তর প্রত্যভিজ্ঞা। প্রত্যভিজ্ঞা বলতে বােঝায় একটি পরিচিতির বােধ, যা না থাকলে শিখন সফল হয় না। প্রত্যভিজ্ঞা' কথার অর্থ ‘চিনে নেওয়া। পূর্বেকার অভিজ্ঞতা বা জ্ঞানকে বর্তমানে চিনে নেওয়ার ক্রিয়াই হলাে প্রত্যভিজ্ঞা। মনােবিজ্ঞানীদের মতে, প্রত্যভিজ্ঞা বলতে বােঝায় একটি পরিচিতির বােধ, যা থাকলে স্মরণক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় না।