ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা সম্পর্কিত ধারাগুলি উল্লেখ করাে।

উঃ ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষা সম্পর্কিত নানা ধারায় শিক্ষাক্ষেত্রে সব শ্রেণির স্বার্থরক্ষার কথা বলা হয়েছে। নিম্নে এপ্রসঙ্গে আলােচনা করা হলাে।
1) প্রাথমিক শিক্ষা : ৪৫ নং ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্র সংবিধান চালু হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত সব ছেলে-মেয়ের জন্য বাধ্যতামূলক, অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে সচেষ্ট হবে।
2) দুর্বলদের রক্ষাকবচ : ভারতীয় সংবিধানের ৪৬ নম্বর ধারা অনুসারে, রাষ্ট্র বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়াদের বিশেষত তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার ব্যবস্থা করবে।
3) ধর্মশিক্ষা ও ধর্মীয় উপাসনা নিয়ে নির্দেশ : ২৮ নং ধারা অনুসারে, সরকারি অনুদানে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া যাবে না। 
4) সংখ্যালঘুদের স্বার্থরক্ষা : ভারতীয় সংবিধানের ২৯ নং ধারা অনুযায়ী, এদেশে বসবাসকারী সব নাগরিকের স্বতন্ত্র লিপি, ভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষার অধিকার থাকবে। ২৯ (১) নং ধারা অনুযায়ী, জাতি, ধর্ম, ভাষা বা অন্য কোনাে বিষয়ের অজুহাত দিয়ে যােগ্য কোনাে নাগরিককে সরকারি অনুদানে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বঞিত করা যাবে না।
5) মাতৃভাষা সম্পর্কিত : ৩৫০ (১) নং ধারা অনুযায়ী, প্রত্যেক রাজ্যকে সংখ্যালঘু ছাত্রদের প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভের সুযােগ দিতে হবে। 
6) হিন্দি ভাষার উন্নতি : ও ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ নং ধারা অনুযায়ী, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও প্রসার ভারত সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
7) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের শিক্ষা : ২৩৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সংসদ কর্তৃক বিধিবদ্ধ আইন ছাড়াও রাষ্ট্রপতি প্রশাসক নিয়ােগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
8) কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব : ভারতীয় সংবিধানের ৬২-৬৭ নং ধারা অনুযায়ী, শিক্ষাক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বের কথা ব্যক্ত হয়েছে।
9) অ্যাংলাে-ইন্ডিয়ান বিদ্যালয়ে সাহায্য : সংবিধানের ৩৩৭ নং ধারা অনুযায়ী, সংবিধান চালু হওয়ার তিন বছর পর্যন্ত পূর্বের ন্যায় অ্যাংলাে-ইন্ডিয়ান বিদ্যালয়ে সাহায্য অব্যাহত রাখতে হবে।

Post a Comment

0 Comments