পরিণমনের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
পরিণমনের বৈশিষ্ট্য :
1) বিকাশের প্রক্রিয়া : পরিণমন বলতে কোনো বিশেষ আচরণ সম্পাদনের ক্ষমতাকে বোঝায় না। পরিণমন হল ব্যক্তি বা শিশুর এমন এক বিকাশ প্রক্রিয়া, যার দ্বারা তার আচরণগত পরিবর্তন আসে এবং নতুন নতুন কর্মদক্ষতা সৃষ্টি হয়।
2) স্বাভাবিক প্রক্রিয়া : পরিণমন কোনো শর্তসাপেক্ষ প্রক্রিয়া নয়। উদ্দীপক পরিস্থিতির বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই পরিণমন শিশুর মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মে সংঘটিত হয়। তাই পরিণমনকে স্বাভাবিক বিকাশের প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
3) বিনা প্রচেষ্টা : পরিণমনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যক্তির চেষ্টার কোনো প্রয়োজন হয় না। পরিণমন ব্যক্তির অজান্তেই ঘটে থাকে। যেমন— কাঁচা আম গাছে থাকতে থাকতে স্বাভাবিক নিয়মে পেকে যায়। পাকানোর জন্য আম পেড়ে ঘরে গরমের মধ্যে না রাখলেও চলে। একইভাবে স্বাভাবিক নিয়মে ব্যক্তিজীবনেও পরিপক্বতা আসে।
4) প্রশিক্ষণনির্ভর নয় : পরিণমনের জন্য কোনোপ্রকার প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। এমনকি এই প্রক্রিয়া ব্যক্তি বা সমাজের ইচ্ছা, অবস্থা কোনো কিছুর উপর নির্ভরশীল নয়।
5) চাহিদানির্ভর নয় : পরিণমন ব্যক্তি বা সমাজের চাহিদার উপর নির্ভরশীল প্রক্রিয়া নয়। অর্থাৎ ব্যক্তির চাহিদা না থাকলেও পরিণমন সংঘটিত হয়। তবে পরিণমন বা পরিণমনজনিত বিভিন্ন পরিবর্তন ব্যক্তির বিভিন্ন ধরনের চাহিদাকে পরিতৃপ্ত করতে সাহায্য করে।
6) সহজাত প্রবণতার উপর নির্ভরশীল : জন্মসূত্রে প্রাপ্ত সম্ভাবনাগুলির বিকাশের উপর পরিণমন নির্ভরশীল। কারণ বহিঃপরিবেশ ব্যক্তির পরিণমনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
7) স্বাভাবিক দক্ষতা অর্জনে সহায়ক : পরিণমনের ফলে ব্যক্তির শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ব্যক্তি সহজেই কোনো বিশেষ দক্ষতা অর্জনে সমর্থ হয়।
8) নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক প্রক্রিয়া : পরিণমন জীবনের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে শুরু হয় এবং একটি বিশেষ পর্যায়ে শেষ হয়। তাই পরিণমনকে জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া বলা যায় না। বিভিন্ন ব্যক্তির পরিণমন বিভিন্ন পর্যায়ে শুরু হয় এবং বিভিন্ন পর্যায়ে শেষ হয়।
9) জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া : পরিণমন নির্ভর করে ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ জৈবিক কেন্দ্রগুলির বিকাশের উপর। তাই জৈবিক কেন্দ্রের বিকাশ ব্যাহত হলে পরিণমন ব্যাহত হয়।
10) বৃদ্ধির সঙ্গে সমার্থক : পরিণমন বৃদ্ধির সঙ্গে সমার্থক হয়।
Post a Comment
Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box