রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতায় ইতিহাসের এক ধারাক্রমকে তুলে ধরেছেন, যা থেকে মনে হয় কবি পঞ্চম শতক থেকে প্রায় আধুনিককাল পর্যন্ত প্রচলিত দাসব্যবস্থার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
সভ্যতার শুরুতে আফ্রিকা ছিল
আদিম অরণ্যে ঘেরা দুর্গম এক ভূখণ্ড | পরবর্তী সময়ে দীর্ঘকাল জুড়ে আফ্রিকার প্রতি
উদাসীন ছিল সভ্য দুনিয়া। “কালো ঘোমটার নীচে/অপরিচিত ছিল তোমার মানবরূপ/উপেক্ষার
আবিল দৃষ্টিতে।” কিন্তু যখন এই আফ্রিকার দিকে উন্নত বিশ্বের চোখ পড়ল তখন এই
মহাদেশ তাদের অত্যাচারের শিকার হল । নেকড়ের থেকেও ধারালো এদের নখ | এই ইউরোপীয়
শক্তিরা আফ্রিকাকে ব্যবহার করল ক্রীতদাস সরবরাহের কেন্দ্র হিসেবে | সভ্য জাতির
বর্বর লোভ নিজেদের অমানবিক রূপটি প্রকাশ করল। অসহায় আফ্রিকার ধূলি কান্নায়,
রক্তে এবং চোখের জলে মিশে কাদায় পরিণত
হল। দস্যুবৃত্তির নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত রেখে গেল সভ্য দুনিয়া। তাদের অত্যাচার যেন
‘চিরচিহ্ন' দিয়ে গেল অপমানিত আফ্রিকার ইতিহাসে। শুধু মানবসম্পদ নয়, প্রাকৃতিক
সম্পদও সভ্য ইউরোপীয় শক্তিগুলির লোভের লক্ষ্য হল। উদ্ধত এইসব দেশের অত্যাচার আর
অমানবিকতায় এভাবেই বারেবারে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে আফ্রিকাকে।