“এল ওরা লোহার হাতকড়ি
নিয়ে’–‘ওরা কারা? ওরা আসার পর কী হয়েছিল?
অথবা “এল মানুষ ধরার দল”—মানুষ ধরার দল’ কারা? তারা আসার পর কী হয়েছিল?
অথবা, সভ্যের বর্বর লোভ নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতা’—সভ্যের বর্বর লোভ কী? তা কীভাবে
নির্লজ্জ অমানুষকে নগ্ন করেছিল?
অথবা ‘পঙ্কিল হল ধূলি তোমার রক্তে অশ্রুতে মিশে’—তোমার’ বলতে কার? তার রক্ত অশু কেন
ঝরেছিল? ১+২
উত্তর :
উৎস : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’
কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে
‘ওরা’ বলতে তথাকথিত সভ্য সাম্রাজ্যলোভী; “মানুষধরার দলের’ কথা বলা হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি
আফ্রিকা মহাদেশে সম্পদের লোভে ভিড় করেছিল। তারা নির্মম শোষণের দ্বারা আফ্রিকাকে করায়ত্ত
করার নির্লজ্জ প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছিল। ফলস্বরূপ আফ্রিকাকে হতে হয়েছিল-মানহারা,
লাঞ্ছিতা, অপমানিতা ও লুণ্ঠিতা।
প্রদত্ত মন্তব্যের
মধ্য দিয়ে এই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নিষ্ঠুরতা ও দাস প্রথার নির্মমতার ইঙ্গিত প্রস্ফুটিত
হয়েছে।
২. তার সেই অধৈর্যে
ঘন-ঘন মাথা নাড়ার দিনে’—“তার’ বলতে কার? সেই দিন কী হয়েছিল?
অথবা, “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে’—কে, কাকে কীভাবে ছিনিয়ে নিয়ে গেল? অথবা আফ্রিকার
জন্ম বৃত্তান্তটি লেখো।
অথবা, বাঁধলে তোমাকে বনস্পতির নিবিড় পাহারায় কৃপণ আলোর অন্তঃপুরে—কাকে কীভাবে কৃপণ
আলোর অন্তঃপুরে বন্দি করা হয়েছিল?
অথবা, বাঁধলে তোমাকে বনস্পতির নিবিড় পাহারায়’-তোমাকে বলতে কাকে? তাকে কীভাবে বনস্পতির
পাহারায় আবদ্ধ করা হয়েছিল?
অথবা, নতুন সৃষ্টিকে বারবার করছিলেন বিধ্বস্ত’—কে, কেন নিজের সৃষ্টিকে বিধ্বস্ত করেছিলেন?
অথবা, ‘এল মানুষ-ধরার দল’—মানুষ ধরার দলের আগমনের আগে আফ্রিকার স্বরূপ কেমন ছিল?
অথবা, আফ্রিকা’ কবিতা অনুসারে আফ্রিকা মহাদেশের উদ্ভবের ইতিহাস আলোচনা করো।
উত্তর :
উৎস : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’
কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে
তার’ বলতে স্রষ্টার কথা বলা হয়েছে।
বহুকাল পূর্বে স্রষ্টা
যখন সৃষ্টিকার্যে রত ছিলেন, সেই আদিম উদ্ৰান্ত কালখণ্ডে নিজের সৃষ্টিজনিত অতৃপ্তির
কারণে তিনি বারবার সৃষ্টিকর্মকে বিধ্বস্ত করে নিখুততর করতে চেয়েছিলেন। সেই দিন রুদ্র
সমুদ্রের বাহু প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে আফ্রিকাকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায় বনস্পতির
নিবিড় পাহারায়। সে পাহারা ছিল নিচ্ছিদ্র আর অভেদ্য। সূর্যালোক পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ
করতে পারত না। তাই সূর্যরশ্মি বিহীন আফ্রিকার অন্দরমহল ছিল কৃপণ আলোর অন্তঃপুর।
দাঁড়াও ওই মানহারা
মানবীর দ্বারে’–“মানহারা মানবী’ কে? তার দ্বারে কেন দাঁড়াতে বলা হয়েছে? ১+২
অথবা “বলো ক্ষমা করো”—কার কাছে কেন ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে?
উত্তর :
উৎস :বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’
কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি নেওয়া হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির
নির্লজ্জ অত্যাচারে আফ্রিকার সম্মান ভূলুণ্ঠিত, তাই কবি ‘মানহারা মানবী’ বলতে হৃতসর্বস্ব
আফ্রিকাকে বুঝিয়েছেন।
সভ্যতাদর্পী বর্বর
সাম্রাজ্যবাদীদের পাশবিক অত্যাচারে আফ্রিকা চূড়ান্ত অপমানিত, লাঞ্ছিত ও রক্তাক্ত।
তার সম্মান ভূলুণ্ঠিত। সৃষ্টির এই কালিমা মোচনের দায় সৃষ্টিকর্তারই। তাই কবি যুগান্তের
কবিকে আহ্বান করেছেন ‘মানহারা মানবী’আফ্রিকার দ্বারপ্রান্তে নতমস্তকে দাঁড়িয়ে ক্ষমা
প্রার্থনা করার জন্য।
৫, এসো যুগান্তের
কবি’—“যুগান্তের কবি’ কে? কোন্ পরিস্থিতিতে তাকে আহ্বান করা হয়েছে?
অথবা, সেই হোক তোমার সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী’—পুণ্যবাণীটি কী? কোন পরিস্থিতিতে তা অনিবার্য
?
উত্তর :
উৎস : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’
কবিতা থেকে প্রদত্ত অংশটি নেওয়া হয়েছে।
যুগকে অতিক্রম করতে
পারেন যিনি, তিনিই হলেন যুগান্তের কবি। অর্থাৎ, আলোচ্য অংশে ‘যুগান্তের কবি’ বলতে স্রষ্টা
বা সৃষ্টিকর্তাকে বোঝানো হয়েছে।
সভ্যতাদর্পী বর্বর
সাম্রাজ্যবাদীদের পাশবিক অত্যাচারে আফ্রিকা চূড়ান্ত অপমানিত লাঞ্ছিত ও রক্তাক্ত। তার
সম্মান ভূলুণ্ঠিত। সৃষ্টির এই কালিমা মােচনের দায় সৃষ্টিকর্তারই। তাই কবি যুগান্তের
কবিকে আহ্বান করেছেন মানহারা মানবী’ আফ্রিকার দ্বারপ্রান্তে নতমস্তকে দাঁড়িয়ে ক্ষমা
প্রার্থনা করার জন্য।
নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার মধ্য দিয়েই বিপন্নতার ঝােড়াে বাতাসে রুদ্ধশ্বাস পৃথিবীকে রক্ষা করা সম্ভব। কবি আশাবাদী যে, হিংস্র প্রলাপে ভরা এই পৃথিবীতে ‘ক্ষমা কর’ শব্দগুচ্ছের উচ্চারণই হবে সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী।