উত্তরঃ মুদালিয়র কমিশন বর্ণিত সাধারণ শিক্ষার কাঠামাে সংক্রান্ত সুপারিশগুলি নিম্নরূপ:
1) শিক্ষণকাল : মুদালিয়র কমিশন সম্পূর্ণ বিদ্যালয় শিক্ষার কালকে ১২ বছর করার সুপারিশ করেছে।
2) প্রাথমিক শিক্ষাস্তর : কমিশন ৪ বা ৫ বছরের প্রাথমিক বা নিম্ন বুনিয়াদি শিক্ষাস্তরের পর মাধ্যমিক শিক্ষা শুরুর সুপারিশ করেছে। মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও সুপরিকল্পিতভাবে শিক্ষার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পর্যায়ের সঙ্গে সংগতি রেখে তার পুনর্গঠনের কাজ করার সুপারিশ করেছে মুদালিয়র কমিশন।
3) মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর: কমিশন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় দু'টি পর্যায়ের সুপারিশ করেছে। যথা – নিম্ন মাধ্যমিক ও উচ্চতর মাধ্যমিক।
4) বিকল্প শিক্ষাকাঠামাে : মুদালিয়র কমিশন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবক-অভিভাবিকাদের অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করে বিকল্প মাধ্যমিক শিক্ষাকাঠামাের প্রস্তাব করে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী প্রচলিত ব্যবস্থায় ১০ বছরের বিদ্যালয় হবে ১১ বছরের। কলেজ স্তরে শিক্ষার যে ইন্টারমিডিয়েট স্তরটি ছিল, সেটাকে দুটি পর্যায়ে ভাগ করে প্রথম ভাগটি মাধ্যমিক শিক্ষার সঙ্গে এবং দ্বিতীয় ভাগটি স্নাতক স্তরের সঙ্গে যােগ করে ৩ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালুর সুপারিশ করেছিল মুদালিয়র কমিশন।
5) অন্যান্য সুপারিশ :
(a) দশম শ্রেণির বিদ্যালয়গুলিকে একাদশ শ্রেণির বিদ্যালয়ে উন্নীত করার ব্যবস্থা।
(b) দশম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এক বছরের প্রাকৃবিশ্ববিদ্যালয় কোর্স অধ্যয়ন করে স্নাতক স্তরে পড়ার যােগ্যতা অর্জন করতে হবে।
(c) একাদশ শ্রেণির পাঠ, উচ্চতর মাধ্যমিক (H.S) এবং প্রাকৃবিশ্ববিদ্যালয় (P.U) কোর্স শেষ করবে যেসব ছাত্র-ছাত্রী তারাই পেশাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার যােগ্য বলে বিবেচ্য হবে।
(d) বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযােগ রয়েছে এমন কলেজে এক বছরের প্রাবৃত্তিমূলক কোর্স চালুর সুপারিশ করে।
(e) কমিশন ছাত্র-ছাত্রীদের নিজ রুচি, প্রবণতা ও সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষার্জনের সুযােগদানের জন্য বহুমুখী বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশও করেছে।
(f) সব রাজ্য সরকারকে কমিশন গ্রামীণ বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করেছে এবং কলেজ স্তরে কর্মমুখী শিক্ষা যেমন কৃষিবিদ্যা, পশুপালন, কুটিরশিল্প ইত্যাদি শিক্ষার সুযােগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।