অন্তদৃষ্টিমূলক শিখন : সমস্যা সমাধানমূলক শিখন কৌশলের ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তদৃষ্টিমূলক শিখন কৌশল। সমগ্রতাবাদীগণ পরীক্ষা থেকে সিদ্ধান্তে আসেন যে প্রতি ক্ষেত্রে প্রাণীরা প্রচেষ্টা ও ভুলের পদ্ধতি থেকে শেখে না। সাধারণত সমস্যার সামগ্রিক রূপ উপলব্বির দ্বারাই প্রাণীরা সমস্যার সমাধান করতে পারে। প্রাণীর এই উপলব্বি হঠাৎই হয়। গেস্টাল্টবাদী মনােবিজ্ঞানীগণ সমস্যার সামগ্রিক রূপ হঠাৎ প্রত্যমানকে অন্তদৃষ্টি বলে চিহ্নিত করেছেন।
■ অন্তদৃষ্টি শিখনের বৈশিষ্ট্য : সমগ্রতাবাদী মনােবিদগণ অন্তদৃষ্টি জেগে ওঠার জন্য দু’টি মানসিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব আরােপ করেন। এগুলি— i) সামান্যীকরণ এবং ii) পৃথকীকরণ।
শিখন পরিস্থিতির মধ্যে যেগুলি প্রসঙ্গ বহির্ভুত, সেগুলিকে বাতিল করে শুধুমাত্র প্রাসঙ্গিক এবং সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি নির্বাচনের নামই হলাে পৃথকীকরণ। পরে ওই সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলির ভিত্তিতেই সামান্যধর্মী সূত্র তৈরি করাকে বলা হয় সামান্যীকরণ।
◆ নিজস্ব বৈশিষ্ট্যাবলি : শিখনের ক্ষেত্রে কোনাে কাজ শেষ হওয়ার আগে বাধা পেলে শিক্ষার্থীর মধ্যে একটি অতৃপ্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। তখন সে তার ওই ধরনের অতৃপ্তিকর অবস্থা সামাল দিতে শিখন পরিস্থিতির সম্পূর্ণ অংশকে বিশ্লেষণ করে এবং তার মধ্যে থেকে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলি বাদ দিয়ে সঠিক গুণকে নির্বাচন করে। এর ফলে শিক্ষার্থীর সামনে সম্পূর্ণ সমস্যার সমাধানের পথটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
◆ সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধান : সমগ্রতাবাদীদের মতে, অন্তদৃষ্টি শিখনের নিজস্ব কতকগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলি হলাে –
1) শিখন পরিস্থিতিকে সামগ্রিকভাবে প্রত্যক্ষ করা;
2) অংশ বিশেষের বদলে সমগ্র সমস্যাটির উদ্দেশ্য সামগ্রিকভাবে বুঝে নেওয়া।
3) পরিস্থিতির অংশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ;
4) সমস্যাটির অন্তর্নিহিত তত্ত্ব এবং বৈশিষ্ট্যগুলির পৃথকীকরণ এবং সামান্যীকরণ ঘটানাে;
5) সবশেষে আচমকা নিজের (শিক্ষার্থীর) আচরণে পরিবর্তন আনা।